স্বাস্থ্য

কিডনি সমস্যার লক্ষণ কি। কি খাবেন । কি খাবেন না

কিডনির  কাজ

“কিডনি” হচ্ছে মানুষের শরিরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।এটি মানুষের পুরো শরিরকে নিয়ন্ত্রন করে।কিডনি সমস্যার কারণে প্রতিবছর অনেক লোক মারা যাচ্ছে।আমাদের কিছু অসতর্কতার কারণে অকালে অনেক মানুষ প্রান হারাচ্ছে। আজকে আমরা আপনাদেরকে এই সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত এবং এর প্রতিকার জানাবো। পাশাপাশি কিডনি কিভাবে ভালো রাখবেন।কি খাবেন আর কি খাবেন না সবকিছু আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাবো। আপনারা আমাদের এই ব্লকটি পড়ুন  অনেক উপকৃত হবেন।

কিডনির  কাজ

কিডনির মূল কাজ হলো পুরো শরীরের রক্ত পরিশোধিত করা এবং দূষিত বর্জ্য বের করা দেওয়া। হার্ট রক্তকে পাম্প করে কিডনিকে দিচ্ছে, কিডনি পরিশোধিত করে হার্টে পাঠাচ্ছে, এভাবে সব সময় চলছে। পরিশোধিত রক্ত মানুষের পুরো শরীরে শক্তি দিচ্ছে। ফলে মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছে। কিডনি প্রতিনিয়ত মানুষের শরীরকে ভালো রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।প্রতিদিন একটি কিডনি ১২০ থেকে ১৫০ লিটার রক্ত পরিশোধিত করে এবং দেড় থেকে দুই লিটার দূষিত বর্জ্য শরীর থেকে বের করে দেয়।যেকোনো ধরনের ময়লা বা বজ্য পানি হোক, লবণ হোক, দূষিত যে কোনো কিছুই কিডনি শরীর থেকে বের করে দেয়। এসব দূষিত বর্জ্যের ৯৫ ভাগের বেশি প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। বাকি বর্জ্য কিছু ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যায় আর কিছু পায়খানার মাধ্যমে বের হয়।এবং কিছু কিছু শ্বাস- প্রশ্বাসের মাধ্যমে বের হয়।

কিডনি শরীরের প্রয়োজনীয় পানি রেখে বাকিগুলো বের করে দেয়। যেমন: একজন মানুষ দশ গ্লাস পানি খেয়েছেন এবং ঘনঘন প্রস্রাব করছেন, এর কারণ হলো-পানি অতিরিক্ত খাওয়া। কিডনি প্রয়োজনীয়টা রেখে বাকিটুকু বের করে দিচ্ছে। আবার কেউ যদি ২৪ ঘণ্টায় একগ্লাস পানি খায় তাহলে সারাদিন তার আর প্রস্রাব হবে না। কারণ, কিডনি প্রয়োজনীয় পানি ধরে রাখবে। শরীরের কার্যক্ষমতা ব্যবস্থাপনার জন্য ন্যূনতম দেড় থেকে দুই লিটার পানি দরকার। সেখানে কোনো মানুষ যদি এক লিটার পানি খায়, দেখা যাবে দিন শেষে  তার অল্প একটু প্রস্রাব হবে।সুতরাং বুঝতেই পারছেন একজন মানুষের শরীরে কিডনি কত বড় গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। নিয়ম মাফিক চলাফেরা করুন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।

কিডনি রোগের লক্ষণসমূহ

এই রোগের কিছু লক্ষণ আছে যে লক্ষণ গুলো আপনারা খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন যে আপনার সমস্যা হয়েছে কিনা। তাছাড়া আপনারা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আপনারা এ রোগের এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।এ রোগের কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো নাক ও মাড়ি থেকে রক্ত ​​পড়া, জ্বর, ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, বুকে ব্যথা, ঘা এবং ডায়রিয়া ।কোমরের দুই পাশে ও তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা, শরীর-মুখ ফোলা ইত্যাদি লক্ষণ কিডনি রোগের সংকেত বহন করে।

কিডনি মানুষের শরীরে একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরি করে সেটা হলো এরিথ্রোপোয়েটিন । এ হরমোন মানুষের শরীরের ৯০ ভাগ রক্ত তৈরি করে। কিডনি যখন অসুস্থ হয়ে যায় তখন এই এরিথ্রোপোয়েটিন হরমোন তৈরি কমে যায়। ফলে রক্ত শূন্যতা তৈরি হয় এবং হার্ট ফেইল, ক্ষুদামন্দা ও শরীর দুর্বল হয়ে যায়।  এ সময় মস্তিষ্কে, হার্টে ও হাড়ে বর্জ্যগুলো জমে যায়। ফলে প্রস্রাব কমে যায়, উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায়। এমনকি শরীর ফুলে যায়। কিছু পদ্ধতির তারতম্যের জন্য ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সমস্যার কারণে কিডিনির ছাকনি নষ্ট হয়ে যায়। এই ছাকনি নষ্ট হলে প্রোটিন লিক করে প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়। ছোট ছোট মেমরেইন আছে যেটি দিয়ে প্রোটিন বের হতে পারে না, শুধু দূষিত পানি বের হয়ে যেতে পারে। যখন কোনো রোগের কারণে মেমরেইনটা নষ্ট হয়ে যায় তখন দূষিত জিনিস বের হওয়ার সঙ্গে প্রোটিনটাও বের হয়ে যায়। ফলে রক্তকে রক্তনালীতে আর ধরে রাখা যায় না। পুরো শরীরের রক্তের পানি, প্লাজমা শরীরের বাহিরে চলে আসে। ফলে শরীর বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়। এবং ছাকনির মধ্যে  যদি পানি জমে যায় তখন লবণও শরীরে জমে যায়। ফলে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়।

কিডনি সমস্যায় কি কি খাবেন

কিডিনি সমস্যার কারণে অনেক ধরনের খাবার খাওয়া প্রয়োজন হতে পারে।সুতরাং যে সমস্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন সে সমস্ত খাবার আপনারা নিয়মিত খাবেন।স্ট্রবেরি স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, মাছ ,কফি, বাদামি চাল ,লাল মরিচ, বাঁধাকপি সহ শাকসবজি খেতে পারেন,দুগ্ধ জাত খাবার খেতে পারেন।

কিডনি সমস্যায় কি কি খাবেন না

সমস্যা দেখা দিলে অনেক ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।কিডনি সমস্যা দেখা দিলে অতিরিক্ত পিউরিন ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ শাকসবজি, পিচ্ছিল ও গাঢ় লাল রঙের শাকসবজি এড়িয়ে যেতে হবে। কিডনি রোগীদের জন্য চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা ইত্যাদি পানীয় সবজি উপকারী। উপকারী হলেও এগুলোর পরিমাণ মেনে চলাও গুরুত্বপূর্ণ। কাঁচা সবজির সালাদ, সবজি স্যুপ ইত্যাদি কিডনি রোগীদের এড়িয়ে চলতে হয়।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।নিয়মিত ঔষধ খেতে হবে।ঠিকমত চিকিৎসা না হলে একজন মানুষের অকাল মৃত্যু হওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন এবং পরামর্শ মেনে চলুন।আরও বিস্তারিত জানতে আমাদের পরের পোস্ট ভিজিট করুন।ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *